কলকাতা: রাজার বাড়িতে গুপ্তধনের গল্প শোনা যায়, কিন্তু ভিক্ষুকের ঘরেও গুপ্তধন লুকিয়ে আছে? এমন ঘটনা প্রায় অবিশ্বাস্য। তবে সেই অবিশ্বাস্য ঘটনাই ঘটেছে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সালার থানার অন্তর্গত হামিদাহাটি–পিলখুন্ডি গ্রামে। বছর ষাটের বাকশক্তিহীন ভিক্ষুক নূর ইসলামের ভাঙা কুঁড়েঘরের মাটির তলা থেকে উদ্ধার হয়েছে বস্তা ভর্তি টাকা। বিষয়টি সামনে আসতেই গ্রামজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে (District news)।
গত কয়েক বছর ধরেই পিলখুন্ডি গ্রামে থাকেন নূর ইসলাম। ভিক্ষা করেই তাঁর জীবিকা চলে। দিনের শেষে গ্রামের মানুষ খেতে দেন—এভাবেই কাটে দিন। এবছরের বর্ষার পরে নূরের ঘর প্রায় ভেঙে পড়ায় প্রচণ্ড শীতে তিনি খোলা আকাশের নীচে থাকতে শুরু করেন। সেই দুঃস্থা অবস্থায় গ্রামবাসীরা উদ্যোগ নেন তাঁর বাড়ি মেরামতের। দিন দু’য়েক আগে সেই কাজের জন্য দু’জন মিস্ত্রি কাজে নামতেই সামনে আসে অবাক করা সত্য।
আরও পড়ুন: ছ’মাসে দিঘায় ৯০ লক্ষ ভক্ত! প্রণামী থেকে আয় দৈনিক ৪ লক্ষ!
ঘরের মাটির ঢিবি কাটতে গিয়েই মিস্ত্রিরা উপলব্ধি করেন নিচে রয়েছে কিছু লুকানো জিনিস। খানিক খোঁড়ার পর বেরিয়ে আসে বস্তা ভর্তি টাকা— ১০, ২০, ৫০, ১০০ টাকার নোট ও কয়েন। জানা গিয়েছে, বহুদিন ধরে ভিক্ষাবৃত্তি করে জমানো প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা মাটি চাপা দিয়ে গোপন করেছিলেন নূর। বাকশক্তিহীন হওয়ায় তিনি কখনও কাউকে তা বোঝাতেও পারেননি। উদ্ধার হওয়া টাকা বর্তমানে গ্রামবাসীরাই গণনা করছেন।
গ্রামবাসীদের বক্তব্য, উদ্ধার হওয়া টাকাই নূরের নতুন বাড়ি তৈরিতে খরচ করা হবে। গ্রামবাসী মহম্মদ হানিফ জানান, “নূরকে কষ্ট পেতে দেখে বাড়ি সারানোর কাজ ধরেছিলাম। কাজ শুরুর পরই টাকা পাওয়া যায়। আমরা স্থির করেছি — এই টাকা দিয়ে ওঁর নতুন ঘর তৈরি হবে।” হতে অন্যান্য বাসিন্দাদের দাবি, কয়েক বছর আগে নূরের দাদা লুৎফল হকের মৃত্যুর পরেও একইভাবে মাটি চাপা অবস্থায় টাকা মিলেছিল, তবে পরে সেই টাকার কী হয়েছিল তা জানা যায়নি।
নূরের ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার অঙ্ক কী পরিমাণ, তা নিয়ে উৎসাহ ছড়িয়েছে গ্রামবাসীদের মধ্যে। তাঁদের হিসাবে দুই লক্ষ টাকারও বেশি নোট ও কয়েন পাওয়া গিয়েছে। নূরকে কেউ “ফড়িং”, কেউ “ছোট বুবা” নামে ডাকেন গ্রামের মানুষ। ভিক্ষা করেও তিনি এত টাকা জমিয়ে এমনভাবে লুকিয়ে রেখেছিলেন— বিষয়টি সকলকেই অবাক করেছে। তবে সবারই আশা, বহু প্রতিক্ষিত কষ্টের জীবন শেষে নূর অন্তত মাথা গোঁজার একটি নিরাপদ ঘর পাবেন।
দেখুন আরও খবর:







